স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আপডেট: ১৯৫২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৩

হকিতে ছিলাম, আছি এবং থাকব: মুনির

Source: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

আপডেট: মে ২৫, ২০১৩

ঢাকা: হকি ফেডারেশনের নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে প্রচার প্রচারণা। মোহামেডান সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক সফিউল্লাহ আল মুনির জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন কাউন্সিলরদের মন জয় করতে।

নির্বাচিত হলে তিনি হকির জন্য কী করবেন সে সম্পর্কেও বলছেন সংশ্লিষ্টদের। শনিবার বাংলানিউজকে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুনির তার পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেছেন। সেখান থেকে আকর্ষণীয় অংশ তুলে ধরা হলো।

প্রশ্ন: নির্বাচনের প্রস্তুতি কতটা এগিয়েছে?

মুনির: প্রস্তুতি ভালো। আবাহনী ছাড়া ঢাকার বেশিরভাগ ক্লাবের সমর্থন পেয়েছি। যদিও বিভাগ এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলরদের ভয় ভীতি দেখাচ্ছে প্রতিপক্ষ। এমন সব লোককে কাউন্সিল করা হচ্ছে যাদের নাম নিশানা বিগত চার বছরে ছিল না। তাদের পক্ষের লোকদের কাউন্সিলর করতে সময় নিচ্ছে। যেজন্য নির্বাচনের তারিখ পর্যন্ত ঘোষণা করছে না। তারা নিশ্চিত হতে চাইছে, নির্বাচনে গেলে পাশ করতে পারবে কিনা। পরিস্থিতি খারাপ দেখলে নির্বাচন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নিতে পারে।

প্রশ্ন: অভিযোগ উঠেছে টাকা দিয়ে ক্লাবের ভোট কিনছেন, এই অভিযোগ কতটা সত্য?

মুনির: এধরনের কথা যারা রটায় তাদের যোগ্যতা নিয়ে আমি সন্দিহান। সাবেক সাধারণ সম্পাদক বারি (শামসুল বারি) ভাইয়ের মতো মানুষের বিরুদ্ধেও কুৎসা রটাচ্ছে তারা। বারি ভাইয়ের ভোট কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারে; আমি বিশ্বাস করি না। নির্বাচনী প্রচারণা নয়, তারা বেপরোয়া হয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে।

প্রশ্ন: পাশ করলে হকি নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

মুনির: যারা হকির সাথে সম্পৃক্তি ছিলেন এমন সাতজনকে সাতটা বিভাগে ডেভলপমেন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেব। যারা তৃণমূল পর্যায়ে হকির প্রসারে কাজ করবেন। ঢাকার বাইরে আগে অনেকগুলো লিগ হতো সেটা চালু করার চেষ্টা থাকবে। পাইপ লাইনে খেলোয়াড় না থাকলে উন্নতি হবে না। এখন বিকেএসপি থেকে খেলোয়াড় আসে। আমি নির্বাচিত হলে সারা দেশ থেকে খেলোয়াড় তুলে আনবো। এছাড়া পেশাদার মার্কেটিং দল গঠন করবো। টাকা না থাকলে কোনো পরিকল্পনাই আলোর মুখ দেখবে না। সাধারণ সম্পাদক পেশাদার বডির সঙ্গে সমন্বয় করবে। এখন হকিতে একটি মাত্র দল। আমরা নির্বাচিত হলে অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৯ এবং অনূর্ধ্ব-২৩ দল রাখবো। সাথে লিগগুলো নিয়মিত হবে।

প্রশ্ন: ক্লাবগুলো নিয়মিত লিগে খেলতে গড়িমসি করে। এখান থেকে উত্তরণের পথ কী?

মুনির: কিছু না, বছরের শুরুতে লিগের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। এখন ১৫ দিন বা ১ মাস আগে বলেন লিগ হবে। ফলে এত কম সময়ে ক্লাবগুলো টাকার যোগার করতে পারে না। ভালো দল গঠনও করতে পারে না। ক্লাবগুলো ফুটবল, ক্রিকেটের পর হকি দল বানায়। সেক্ষেত্রে বছরের শুরুতে বলে দিলে ডান-বাম করতে পারবে না।

প্রশ্ন: হকি ফেডারেশনে অনেক বেশি রাজনীতি, সেসব মোকবেলা করে টিকে থাকতে পারবেন?

মুনির: মোহামেডান হকির জন্য যথেষ্ট করে। জাতীয় দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই মোহামেডানের। বিদেশি কোচ, ফিজিও এবং ভিডিও এনালিস্ট রেখে মোহামেডান দল পরিচালনা করেছে। আমি ভালো কাজ করলে রাজনীতি সমস্যা হবে না। স্পোর্টসের সাথে রাজনীতি সম্পৃক্ত করা ঠিকও নয়।

প্রশ্ন: একটা কথা শোনা যাচ্ছে, নির্বাচনে জিততে না পারলে আপানি হকিতে থাকবেন না। মোহামেডান ভালো দল নাও করতে পারে?

মুনির: আমার দল হয়ে গেছে। জাতীয় দলের পাঁচ ছয় জন খেলোয়াড় মোহামেডান নিশ্চিত করে ফেলেছে। অতএব মোহামেডান ভালো দল গড়বেই। আর হকি ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। মোহামেডান ছাড়াও বেশ কয়েকটি ক্লাবের সাথে আমি সম্পৃক্ত হয়েছি। হকির সঙ্গে আছি এবং থাকবো।

প্রশ্ন: ঐক্যমতের প্যানেলের প্রস্তাব এলে কী সিদ্ধান্ত নিবেন?

মুনির: মোহামেডান প্যানেলে আমি একা একজন লোক না। অনেক ক্লাবের সমন্বয়ে এই প্যানেল। সিনিয়ররা সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাকে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য মনোনিত করেছেন। আমার চেয়ে যদি ভালো কেউ থাকলে তারা বিচার বুদ্ধি করে সিদ্ধান্ত নিবেন।

প্রশ্ন: সংগঠক হিসেবে আপনার অভিজ্ঞতা কম, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনেকেই আপনাকে মেনে নিতে চাচ্ছে না?

মুনির: এইটা একদম অমূলক ব্যাপার। যোগ্যতার মাপকাঠি যদি বয়স হয়, তাহলে জুম্মন লুসাই ভাইকে সাধারণ সম্পাদক করে দিলেই তো হয়। পেশাদার যুগে যোগ্য এবং দক্ষতাই আসল। কাজটা কে কত সুন্দর ভাবে করতে পারে সেটাই আসল।  

প্রশ্ন: দাবি উঠেছে জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড়রা আপনার পক্ষে নেই?

মুনির: যারা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন কেবল তারাই তাদের পক্ষে। যোগ্যতার মাপ কাঠিতে কেউ আসেনি। যারা যোগ্য তারা আমাদের সাথে থাকবেন।

প্রশ্ন: বিগত ৪০ বছরে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সুযোগসুবিধা দিতে পারেনি ফেডারেশন। তাদের নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

মুনির: আমরা আসলে জাতীয় দলকে একটা কোড অব কন্ডাক্টের ভেতরে আনবো। অল্প টাকা হলো তাদের মাসে মাসে দিব। আজ লিখিত চুক্তি থাকলে খেলোয়াড়রা এমনটা করতে পারতো না। তারা ক্যাম্পে যোগ দিতো।

প্রশ্ন: দেশের স্বার্থে আপনি কী খেলোয়াড়দের জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিতে আহ্বান জানাবেন?

মুনির: যারা দায়িত্বে আছে তারা ব্যর্থ। তাদের খেলোয়াড়দের ‘কনভিন্স’ করতে পারেনি। দেশের স্বার্থে আমি অবশ্যই খেলোয়াড়দের আহ্বান জানাবো জাতীয় দলের ক্যাম্পে আসতে।